তৃপ্তি রঞ্জন সেন, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি : বিশ্ব মা দিবসে “গরবিনী মা-২০২৪” পুরস্কার পেলেন খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনির কৃতিসন্তান বিশেষ জজ (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) ঢাকা, শেখ হাফিজুর রহমান এর মা সাহারা রহমান। ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্যোগে সারা দেশ থেকে ১০ জন গরবিনী মাকে সম্মননা জানানো হয়েছে। আইন ও বিচারে বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমানের মা সাহারা রহমান, আইন ও শৃঙ্খলায় প্রনয় কুমার জোয়ারদার (পুলিশ সুপার) এর মা সুরুচি জোয়ারদার, চিকিৎসায় অধ্যাপক ডাঃ আবু নাসার রিজভী এর মা নাফিজা বেগম, গণমাধ্যমে জাবেদ সুলতান পিয়াস এর মা জেবুননেছা, অভিনয়ে (পুরুষ) শতাব্দী ওয়াদুদ এর মা আফরোজা নাছরীন, প্রশাসনে হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন এর মা সাজেদা খাতুন, শিক্ষায় ড. সামসাদ মতুর্জা এর মা সৈয়দা নাসরিন মতুর্জা. প্রকৌশলে প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল ইসলাম এর মা হোসনে আরা, সংগীতে তাহসান রহমান খান এর মা প্রফেসর ড. ডেজ এন তাহমিদা বেগম ও অভিনয়ে(নারী) মেহজাবীন চৌধুরী এর মা গাজাল চৌধুরী।
মায়ের সাথে সন্তানের সম্পর্ক চিরন্তন ও শ্বাশত। রাজধানীতে আন্তর্জাতিক মা দিবসের নানা আয়োজনে মায়ের প্রতি আরও যত্নবান হওয়ার তাগিদ ছিল। মহাখালীর রাওয়া কনভেনশন হলে। ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সম্মাননা জানানো হয় ১০জন গরবিনী মাকে। মুহুর্তেই ঢাকাস্থ রাওয়া কনভেনশন হল যেন অন্য রকম আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল। অনুষ্ঠানের আয়োজক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ আশীষ কুমার চক্রবর্তী জানান, কোন সংগা বা দিবস দিয়ে মায়ের ভালোবাসার গভীরতাকে মাপা যায় না। মহিয়সী মায়েদের শ্রদ্ধা জানাতে এই ছোট প্রয়াস।
প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ,ক,ম মোজাম্মেল হক বলেন, সন্তানকে সুশিক্ষায় গড়ায় নিপুন কারিগর মা। শুধু এই দিনই না প্রতিদিনই হয় যেন মায়েদের জন্য অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অভিনেতা ফেরদৌস আহম্মেদ, নন্দিত চলচিত্র অভিনেতা সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য শ্রীমতি আরমা দত্ত। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও এফডিসিসি আই এর পরিচালক প্রীতি চক্রবর্ত্তী।
অনুভূতি প্রকাশে শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, মায়েরা সকাল হতে রাত অবদী হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন শুধুমাত্র সন্তানদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। মায়েদের কোন ছুটি নেই। নেই কোন পারিশ্রমিক। আমি আমার মায়ের প্রতি দায়িত্বশীল। আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিশ্বের সকল সন্তানদের বলি তারা যেন তার মায়ের প্রতি দায়িত্ববান থাকে।
গরবিনী মা সাহারা রহমান বলেন, এই প্রাপ্ত সন্তানের ভালোবাসা।
বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ হাফিজুর রহমান বর্তমানে বিশেষ জজ হিসেবে (বিশেষ জজ আদালত, ঢাকা-০৯) ঢাকাতে কর্মরত আছেন। তিনি খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রামনগর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। খুলনা ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির হতে ১৯৮৯ সালে এস এস সি পাশ করেন। ১৯৯৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে উচ্চতর দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রথমস্থান অধিকার করে এল এল বি(সম্মান) ডিগ্রী ও ১৯৯৬ সালে প্রথম শ্রেনিতে এল এল এম ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৮তম বি সি এস পরীক্ষায় উর্ত্তীন হয়ে সহকারী জজ হিসেবে বাগেরহাট জেলা জজ যোগদান। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে সহকারী রেজিষ্টার ও ডেপুটি রেজিষ্ট্রার (২০০৬-২০১১সাল) দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালে ঢাকায় চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট (সিএমএম) পদে যোগদান। তিনি এ সময় অত্যন্ত সততা ও দক্ষতার সাথে এই পদে দায়িত্ব পালন করে রেকর্ড সংখ্যক মামলা নিষ্পত্তির নজির স্থাপন করেন। তিনি ২০২৩ সালে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ (গ্রেড-১) পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। শেখ হাফিজুর রহমানের পিতা শেখ আজিজুর রহমান একজন অবঃ শিক্ষক। মা সাহারা রহমান একজন সুগৃহিনী। তারা দুই ভাই বিশ্ববিদ্যালয় হতে অনার্স ও মাষ্টার্স ডিগ্রী অর্জন করে সরকারি চাকরীতে কর্মরত। তার তিন বোন গৃহিনী। শেখ হাফিজুর রহমান ব্যক্তি জীবনে বিবাহিত এবং দুই পুত্র সন্তানের জনক। স্ত্রী নুরজাহান জেসমিন সুগৃহিনী। শেখ হাফিজুর রহমান দীর্ঘদিন ঢাকায় বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিসেবে অধ্যাপনা করে আসছেন। তিনি পেশাগত ও ব্যক্তিগত কারনে সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, মালায়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কানাডা, ওমান, ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভারত ভ্রমন করেছেন। এদিকে কপিলমুনির কৃতিসন্তান শেখ হাফিজুর রহমানের মা গরবিনী মা-২০২৪ পুরস্কার পাওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন, সুন্দরবন প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম মুস্তাফিজুর রহমান পারভেজ. সাধারন সম্পাদক শেখ দীন মাহমুদ, কপিলমুনি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ হাবিবুল্যাহ বাহার, মেহেরুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রহিমা আখতার শম্পা, সহচরী বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সঞ্জয় কুমার মন্ডল প্রমুখ।