Sunday, September 8, 2024

আশাশুনির যদুয়ারডাঙ্গা প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষার্থীরা সড়কের দুরাবস্থায় নাজেহাল

Must read

 

আশাশুনি (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি : আশাশুনি উপজেলার কাদাকাটি ইউনিয়নে ৪১ নং যদুয়ারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতয়াতের রাস্তার (খালের রিং) এর বেহাল দশায় স্কুলে যাতয়াতে রীতিমত নাকানি চুপানি খাচ্ছে। সড়ক না থাকায় কাদামাটি দূষিত পানি ভেঙে প্রতিদিন বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে অসহায়ত্ব বরণ করতে বাধ্য করা হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে।
জানাগেছে, ১৯৫০ সালে যদুয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। এখানে বর্তমানে ৬ জন শিক্ষক, একজন নৈশপ্রহরী, ১৪০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়ে সুনামের সাথে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই খালের আইল পাড়ি দিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে আসছে কোমলমতি শিশুরা। টেংরাখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৮০০ মিটার দূরে জমির আইল/বাঁধ দিয়ে শিশুরা যাতায়াত করে থাকে। ব্যবহৃত জমির আইলে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয় শিক্ষার্থীদের। অন্য পথে কাউকে আবার হাঁটু পানি ভেঙে বিদ্যালয়ে যেতে হয়।
এ ব্যাপারে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ঐশী সরকার জানায়, বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সময় প্রায়ই বই, খাতা ও পরনের পোশাক ভিজে যায়। দ্রুত বিদ্যালয়ের যাতায়াতের রাস্তাসহ মাঠ নির্মাণের দাবি জানিয়েছে ওই শিক্ষার্থী ।
তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র তুয়া রায় জানায়, বৃষ্টি হলে জমির আইল ডুবে যায়। আমরা কষ্ট করে যাতায়াত করতে পারলেও আমাদের খুব সমস্যা হয়। মাঝেমধ্যেই পড়ে গিয়ে বই খাতাসহ পোশাক ভিজে যায়। কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত আমাদের স্কুলের রাস্তা বানিয়ে দেয় বলে আকুতি তার।
বর্তমান মেম্বর ও স্কুলের সভাপতি উত্তম কুমার সরকার বলেন, আমার মেয়ে এই স্কুলে পড়ে, বৃষ্টি হলে জমির আইলে পানি উঠে গেলে যাতায়াতের সময় সাপে কাটাসহ নানা ধরনের ঝুঁকি দেখা দেয়। বাধ্য হয়ে কাজ বাদ দিয়ে মেয়েদের স্কুলে রেখে আসতে হয়।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক তাপসী সরকার বলেন, বৃষ্টির মৌসুমে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসতে ছাত্র-ছাত্রীদের বই খাতা ভিজে যাচ্ছে। এতে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ। তাছাড়া বিদ্যালয়ের মাঠ না থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারেনা। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি বিদ্যালয়ে শিশুদের যাতয়াতের ঝুঁকি ও ভোগান্তির কথা স্বীকার করেছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি উত্তম কুমার সরকার। খালের পাশেই সড়ক থাকায় বৃষ্টির পানি নামতে পারে না। তাই বৃষ্টি হলেই দ্রুত জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ভোগান্তি নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
কাদাকাটি ইউপি চেয়ারম্যান দীপঙ্কর কুমার সরকার দীপ বলেন, বিদ্যালয়ের রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ এসেছিল, কিন্তু খাল খননের কারণে রাস্তা নির্মাণে আপত্তি জানানোর কারণে বরাদ্দ ফেরত গেছে। বিদ্যালয়ের রাস্তা ও মাঠ নির্মাণে পুনরায় উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। শীঘ্রই সমস্যার সমাধান করা হবে। খালের পাশেই এই সড়ক থাকায় বৃষ্টির পানি নামতে পারে না। ফলে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, ভোগান্তি নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
আশাশুনি উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার বর্মন জানান, বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রধান শিক্ষককে নিয়ে একটা ব্যবস্থা করব। জন প্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলবো। দ্রুতই শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা হবে। তিনি আরো জানান, আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাঠ থাকা অত্যন্ত জরুরি। খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঘটে। বিদ্যালয়টিতে খেলাধুলার উপযোগী মাঠ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে বলে তিনি ঘোষণা করেন।

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest article