Sunday, October 19, 2025

ডুমুরিয়ায় গুলিতে নিহত চেয়ারম্যান রবি’র দাফন সম্পন্ন

Must read

 

সুজিত মল্লিক, ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি : পারিবারিক কবরস্থানে পিতার পাশেই শায়িত হয়েছেন জনপ্রিয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলাম রবি। তিনি ০৬ জুলাই ২০২৪ রোজ শনিবার রাত আনুমানিক পৌনে ১০টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন। খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের গুটুদিয়া ওয়াপদার-মাথা ব্রীজের পুর্ব পাশে সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এরই মধ্যে জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন টীম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং হত্যার মোটিভ উদ্ধারে মাঠে নেমেছেন তারা। তবে নিহতের পরিবার ও তার কর্মী-সমার্থকদের দাবি চেয়ারম্যানের নির্বাচনী প্রতিপক্ষ বা বিগত সংসদ ও সদ্য সমাপ্ত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৮নং শরাফপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলাম রবি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তিনি মোটর-সাইকেল যোগে খুলনার যাওয়ার সময় গুটুদিয়া ওয়াপদার-মাথা ব্রীজের পাশে ফেলে সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। যা তার পিঠের ৬/৭ টি স্থান ভেদ করে। গুলির আঘাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাকে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। এবং সেখানে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ লাশের সুরোতহাল রির্পোট সম্পন্ন করেন এবং আজ ০৭ জুলাই ২০২৪ রোজ রোববার সকালে খুমেক হাসপাতালের ডাক্তার তার ময়না তদন্ত রির্পোট সম্পন্ন করেন। জানা গেছে, নিহত চেয়ারম্যান রবি তার পরিবারসহ খুলনা শহরের নিরালা এলাকায় বসবাস করেন। পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন সেখান থেকে এসে। নিহত চেয়ারম্যান ২ পুত্র সন্তানের জনক এবং তার স্ত্রী সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা। তার জন্মস্থান শরাফপুর ইউনিয়নের ভুলবাড়িয়া গ্রামে। পারিবারিক ভাবে তারা ২ ভাই ও ৫ বোন। শিক্ষাগত দিক দিয়ে তিনি মাস্টার্স পাস। লেখাপড়ার শুরুতে ছাত্রলীগ রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ছাত্র জীবন থেকেই এলাকাবাসীর কাছে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। যার ফলে ওই ইউনিয়নে পর পর ৩বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বর্তমানে ইউনিয়ন জুড়েই চলছে শোকের মাতন। সন্ত্রাসীর গুলিতে চেয়ারম্যান রবি’র অকাল মৃত্যুতে হতভম্ভ তার কর্মী-সমার্থকরা। ইউনিয়নের মোড়ে মোড়ে তার স্মৃতি করছেন শোকাহত মানুষ। এছাড়া শরাফপুর ও বানিয়াখালী বাজার ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখেছেন এবং এসব বাজারে দফায় দফায় চলছে মিছিল ও প্রতিবাদ সভা। সভায় বক্তারা হত্যাকারীসহ জড়িত সকলের কঠোর শাস্তির দাবি জানান। তবে নিহতের পরিবার ও তার কর্মী-সমার্থকদের দাবি, রবি চেয়ারম্যানের নির্বাচনী প্রতিপক্ষ হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা এ এইচ এম ওবাঈদ উল্লাহ। দু’জনের মধ্যে চরম দ্বন্দ। এছাড়া বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচন নিয়েও তিনি খুন হতে পারেন। নিহত চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলাম রবি ছিলেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি’র অত্যন্ত কাছের মানুষ। নির্বাচনে শরাফপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান রবি’র নেতৃত্বে তিনি অনেক ভোট পান। এরপর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও গাজী এজাজ আহমেদের ঘোড়া প্রতীকে বিপুল সংখ্যাক ভোট পড়ে চেয়ারম্যান রবি’র প্রচেষ্ঠায়। এ সব নির্বাচনে এ এইচ এম ওবাঈদউল্লাহ ছিলেন বিপক্ষ অবস্থানে। তার কর্মী-সমার্থকদের দাবি, এ সব কারণে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে ভুল-বাড়িয়াস্থ পারিবারিক কবর স্থানে তার পিতার পাশেই তাকে সমাহিত করা হয়েছে। এর আগে বানিয়াখালি মাওলানা ভাসানী কলেজ ও ভুলবাড়িয়া ঈদগাহ ময়দানে মরহুমের দু’দফা জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানায়ায় হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটে। এর আগে ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি তাকে দেখতে তার বাড়িতে যান। এ সময় তিনি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করেন। এদিকে হত্যাকান্ড নিয়ে ডুমুরিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুকান্ত সাহা জানান, জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি নিয়ে মাঠে নেমে পড়া হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুনীদের আটক করা হবে।

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest article